Asha Jaoar Majhe / Labour of love (2014)

Labour of love (2014)-cinemabaaz.xyz

Share This Post

যখন নীরবে দূরে,
দাঁড়াও এসে,
যেখানে পথ বেঁকেছে

তোমায় ছুঁতে চাওয়ার মুহূর্তরা
কে জানে, কি আবেশে দিশাহারা
আমিও ছুটে যাই সে গভীরে
আমিও ধেয়ে যাই কি নিবিঢ়ে

তুমি কি মরিচিকা,
না, ধ্রুবতারা

ব্যান্ড- শহর

নীল আর পূর্ণতার বিয়ের বয়স ৩মাস হতে চললো। যদিও তাদের বিয়েটা এখনো গোপন। নীল চাকরি সূত্রে ঢাকায় বসবাস করে আর পূর্ণতা বরিশালে। প্রতিমাসে তাদের মাত্র ১ বারের জন্য দেখা হয়। নীলের ঢাকা থেকে বরিশাল আসতে যেতে প্রায় ১৩ ঘন্টার মতো সময় লাগে।
২০১৪ সালে পরিচালক আদিত্য বিক্রম সেনগুপ্ত নির্মান করেন চলচ্চিত্র “আসা যাওয়ার মাঝে”। অর্ন্তজাল দুনিয়া ঘেটে জানতে পারলাম, বিভিন্ন ফ্যাস্টিবালে অংশগ্রহন করে প্রংশসিত হয়েছিলো “আসা যাওয়ার মাঝে”।
‘৬২তম ন্যাশনাল ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছিলো বেস্ট ফিল্ম, বেস্ট অডিওগ্রাফি ক্যাটাগরিতে। বেস্ট ফিল্ম, বেস্ট ডিরেক্টর, বেস্ট অরিজিনাল স্ক্রিনপ্লের আখ্যা পায় ‘নিউইয়র্ক ইন্ডিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’ এ। সিনেমায় অভিনয় করেন বাসবদত্তা চট্টোপাধ্যায়, ঋত্বিক চক্রবর্তী।
কলকাতার পুরোনো ধাঁচের বাড়ি, জাফরি কাটা বারান্দা। এমন এক বাড়িতে থাকেন এক কর্মজীবী দম্পতি। স্ত্রী (বাসবদত্তা চট্টোপাধ্যায়) কাজ করেন মেয়েদের ব্যাগ তৈরির কারখানায় আর স্বামী (ঋত্বিক চক্রবর্তী) রাতের ছাপখানায়। আলাদা ডিউটি হওয়ার দুজনের অবসরও আলাদা। বলার মতো করে কেউ কারো সংস্পর্শ পাবার সুযোগ নেই। কেবল প্রতিদিনকার আসা যাওয়ার মাঝে সামান্য কিছু সময়। ব্যস, ঐটুকুই।
এরপর সারাবাড়ি জুড়ে একলা একলা পড়ে থাকা, অপেক্ষার প্রহরের গল্প। এছাড়াও তাদের দুজনার প্রতিদিনকার ছোট ছোট ঘটনা, তাদের জীবনযাপন, অভ্যাস, নিত্যদিনের গল্পই পুরো সিনেমাটাকে এক সুতোয় জুড়ে দিয়েছে।
কলকাতার গলি, ভেজা পায়ের ছাপ, ট্রামলাইন, সূর্যাস্তের দৃশ্য, মেলে দেয়া ভেজা শাড়ি-সায়া-পাজামা, মাটির ব্যাংক, বেতনের টাকা গুঁজে রাখার টিনের কৌটা, বাজারের ফর্দ, কচি পেয়াজকলি, চাল-ডাল-তেল-বড়ি নাড়াচাড়ার শব্দ। গোসলের সময় দুটো সাবান আলাদা করে রাখা।
সিনেমায় দু’জনের প্রতিদিনের জীবনের ছোট ছোট বিষয়গুলো ফুটে ওঠে। তারপর সন্ধ্যা হতেই কাপড় তুলে ঘরে আনা, কাজে যাওয়ার প্রস্তুতি, সন্ধ্যায় পূজোর আগরবাতি জ্বালানো, স্বামীর কাজে চলে যাওয়ার পর স্ত্রীর ঘরে ফেরা, আবার একা খাওয়া-দাওয়া করে সব গুছিয়ে শুয়ে পড়া।
পুরো সিনেমায় কোনো সংলাপ নেই, তাই এই দু’জন মানুষ শেষ অবধি আমাদের কাছে নাম-পরিচয়হীনই থেকে যায়।
“আসা যাওয়ার মাঝে” সিনেমায় মাত্র নয়জন প্রোডাকশনে কাজ করেছিলেন। সিনেমাটোগ্রাফিতে ছিলেন মাহেন্দ্রা শেঠি আর পরিচালক বিক্রম আদিত্য সেনগুপ্ত নিজে।
পরিচালকের মতে, তিনি অভিনয়শিল্পীদের অভিনয় করতে বারণ করেছিলেন এবং এই অভিনয় না করার অভিপ্রায় থেকেই যেন এতটা বাস্তবসম্মত সিনেমাটি দর্শকদের সামনে পৌছে দিতে পেরেছেন।

লেখা শুরু করেছিলাম নীল আর পূর্ণতার কথা দিয়ে। নীল আর পূর্ণতাকে জিগ্যেস করেছিলাম, তোমাদের কি খারাপ লাগে না, বিয়ের পরও দু’জন দুই শহরে থাকো।
উত্তরে তারা বলে, এইত আর কয়দিন, তারপর সব ঠিক হয়ে যাবে।

তোমায় ছুঁতে চাওয়ার মুহূর্তরা
কে জানে, কি আবেশে দিশাহারা
তোমায় ছুঁতে চাওয়ার মুহূর্তরা

কে জানে, কি আবেশে দিশাহারা
কে জানে, কি আবেশে দিশাহারা।

লিখেছেনঃ Faiaze Ahmed

অন্যান্য মুভি ডাউনলোড ও ব্লগের জন্য ভিজিট করুনঃ Blog

More To Explore

Cinema Paradiso (1988) সিনেমা রিভিউ

🎬 Movie ⭕ Cinema Paradiso (1988) ইতালির সিসিলি অঞ্চলে ছোট্ট একটি শহর জিয়ানসালদো। শহরের বাসিন্দাদের মাঝে আনন্দের খোরাক একমাত্র সিনেমা হল৷ যেটির প্রজেকশনিস্ট হিসেবে কাজ

Read More »

The Godfather : Part 2,3 সিনেমা রিভিউ

🎬 Movie ⭕ The Godfather : Part 2,3 গড ফাদার ট্রিলজিকে বলা যায় ক্রাইম ড্রামার অগ্রপথিক এবং সফল কাণ্ডারী। Goodfellas এর মত সারা জাগানো সিনেমা

Read More »