The Bucket List (2007)
The Bucket List (2007) : মানুষকে যদি তার মৃত্যুর সময়টা আগে থেকেই জানার সুযোগ দেওয়া হত, তবে বেশিরভাগ মানুষই হয়তো তা জানতে চাইতো না। মানুষ মোহের মধ্যে পড়ে থাকতেই ভালবাসে, মৃত্যু নামক অনিবার্য পরিণতির কথা ভাবতেও ভয় পায়, এ নিয়ে যাবতীয় চিন্তাভাবনা এড়িয়ে চলতেই পছন্দ করে। আমরা কেউই জানি না, আসলে আমাদের কার হাতে ঠিক কতটুকু সময় আছে।
দৈনন্দিন জীবনের চাহিদা মেটাতে আর বেঁচে থাকার তাগিদে পথ চলতে চলতেই ঠিক কখন যে মানুষ তার জীবনের একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে পড়ে তা কেউই বলতে পারে না। প্রত্যেক মানুষের জীবনেই কিছু চাওয়া-পাওয়া, ইচ্ছা-আকাঙ্খা থাকে, প্রত্যেক মানুষই চায় তার সারাজীবনের কোন এক সময়ে হলেও যেন সে তার সেই ইচ্ছেগুলোকে পূরণ করে যেতে পারে। তবে খুব কম মানুষই সে-ই পরিতৃপ্তি নিয়ে পৃথিবী ত্যাগ করতে পারে, প্রকৃতপক্ষে প্রত্যেক মানুষকেই কিছু না কিছু অতৃপ্তি আর অপূর্ণতার বেদনা নিয়েই চলে যেতে হয়।


Bucket list বলতে মূলত সেসব ইচ্ছা, আকাঙ্খাকে বোঝায় যেগুলো মানুষ তার জীবনকালে পূরণ করতে চায়। কার্টার এবং কোল, দুজনে দু মেরুর মানুষ হলেও ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দুজনেরই জায়গা হয় হাসপাতালের একটা রুমে। প্রথমদিকে একে অপরকে দেখতে না পারলেও একসময় তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়ে যায়। ডাক্তার এসে কোলকে জানায় যে, তার হাতে আর বড়জোর ছয়মাসের মত সময় আছে। একদিন কার্টারের হাতে একটা লিস্ট কোলের চোখে পড়ে, যেখানে তার অনেকগুলো ইচ্ছের কথা লিখা আছে, যার অনেকগুলো হয়তো তার পূরণ করার সামর্থ্য নেই, শুধুমাত্র তার মানসিক প্রশান্তির জন্যই লিস্টটা করা, সে এটাকে তার Bucket list বলে উল্লেখ করে। কোল নিজেও list-এ তার নিজের কতগুলো ইচ্ছা যোগ করে আর আর্থারকে প্রস্তাব দেয় দুজন মিলে তাদের সেই ইচ্ছেগুলো পূরণের অভিযানে বের হতে। কথামতো তারা বেরিয়ে পড়ে আর তাদের জীবনকে নতুনভাবে আবারো আবিষ্কার করে, জীবনের এক নতুন মানে খুঁজে পায়।


প্রাচীন মিশরের মানুষরা বিশ্বাস করত যে, মৃত্যুর পর তাদের আত্মাগুলো যখন স্বর্গের প্রবেশদ্বারে পৌঁছায়, স্বর্গদ্বারের প্রহরী তখন তাদের দুটো প্রশ্ন করত, যে প্রশ্নের উত্তরগুলোর উপর নির্ভর করতো তারা স্বর্গে প্রবেশ করতে পারবে কিনা। প্রশ্ন দুটো হলো, তুমি কি তোমার জীবনে আনন্দ খুঁজে পেয়েছো? তোমার সারাজীবনের কাজকর্ম কি অন্যদের জীবনে খুশির কারণ হতে পেরেছে? মানুষের জীবনের সার্থকতা একেক জন একেকভাবে পরিমাপ করে। তবে জীবন নিয়ে নিজের সন্তুষ্টি আর চারপাশের মানুষের ঠিক কতটা উপকারে আসা গেছে এর উপরেই হয়তো সার্থকতাটা অনেকটা নির্ভর করে।
কার্টার চরিত্রে মরগান ফ্রিম্যান আর কোল চরিত্রে জ্যাক নিকলসন, দুজনেই অসাধারণ অভিনয় করেছেন, দুজনই অসম্ভব প্রিয় অভিনেতা। মরগান ফ্রিম্যানের কণ্ঠে সংলাপগুলো বরাবরই দারুণ মানায়। মুভির পুরোটা সময় মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করেছি। জীবন সম্পর্কে নতুন করে ভাবানোর মত একটা মুভি।
লিখেছেনঃ Raihan Bin Sultan Bandhan
ডাউনলোড লিংক নিচে দেওয়া আছে।
অন্যান্য মুভির জন্য ভিজিট করুন এই লিংকে।