The Curious Case Of Benjamin Button (2008)

The Curious Case Of Benjamin Button (2008)-cinemabaaz.xyz

Share This Post

The Curious Case Of Benjamin Button (2008)
স্বাভাবিক ভাবে জন্মগ্রহণ করা সৃষ্টিকর্তার অনেক বড় নিয়ামক। একটু ক্ষুদ যদি থাকে তাহলে পেতে হয় আজীবন বেদনা। পেতে হয় চারপাশের স্বাভাবিকের নামে অস্বাভাবিক সব মানুষদের লাঞ্চনা। শুধু জন্মগ্রহণ-ই নয়, এই বিশ্বের সব কিছুই সৃষ্টিরকর্তার অশেষ রহমতে স্বাভাবিক নিয়মে চলছে। যদি কোন সময় এর ব্যতিক্রম ঘটে তাহলে এই বিশ্ব তলিয়ে যাবে আঁধারে। স্বাভাবিক নিয়মের বাইরে কিছু হলে সেটাকে ফ্যান্টাসি কিংবা আশীর্বাদ মনে হলেও আদতে সেটা অভিশাপ এবং একটু খানি সুখ দেয়ার পর সেটা তছনছ করে দেয় সবকিছু। “দ্য কিউরিয়াস কেইস অব বেঞ্জামিন বাটন” সিনেমাটি যেন এমন কিছু কথার-ই প্রতিফলিত রূপ।
[No Spoiler]
সিনেমাটির গল্পটি আবর্তিত হয়েছে বেঞ্জামিন বাটনকে নিয়ে। সদ্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছে। চারিদিকে চলছে জয়ের উৎসব। এমন সময় এই উৎসব মুখর পরিবেশে ইংল্যান্ডের বাটন পরিবারের ঘর আলো করে জন্মগ্রহন করে বেঞ্জামিন। যদিও সেই আলো দীর্ঘস্থায়ী হয় না। জন্ম দিতে গিয়ে তার মা মারা যায়। আর সবথেকে খারাপ ব্যাপার যেটা ঘটে সেটা হলো বেঞ্জামিনের বৃদ্ধ হয়ে জন্ম লাভ করা। সদ্য জন্ম নেয়া শিশু হলেও তাকে দেখতে একদম ৮০-৯০ বছরের বৃদ্ধের মতো লাগে। তার বাবা এটা মেনে নিতে পারে না। তৎক্ষনাত শহরের এক নির্জন জায়গায় একটা বাড়ির সামনে বেঞ্জামিনকে ফেলে রেখে নিজের বাড়িতে চলে আসে তার বাবা। সেই বাড়িতে থাকতো কুইনি নামের এক মমতাময়ী মহিলা। সে অনেক আদর যত্নের সাথে তাকে লালন পালন করতে থাকে। বেঞ্জামিন অস্বাভাবিক ভাবে অর্থ্যাৎ বৃদ্ধ হয়ে জন্ম গ্রহণ করেছিলো বিধায় সে সময়ের সাথে বৃদ্ধ থেকে যুবক হতে থাকে। একদিন তার ডেইজি নামে এক সুন্দরী মেয়ের সাথে দেখা হয়। ডেইজি তাকে জীবন সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে শেখায়, শেখায় ভালোবাসতে। এভাবে বেঞ্জামিনের গল্প এগোতে থাকে।
নব্বই দশকের সিরিয়াল কিলিং নিয়ে “সেভেন (১৯৯৫)”, মিস্ট্রি থ্রিলার “দ্য গেম (১৯৯৭)”, সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার “ফাইট ক্লাব (১৯৯৯)” কিংবা তার পরের দশকের অ্যাকশন সার্ভাইবেল থ্রিলার “প্যানিক রুম (২০০৪)” এবং সিরিয়াল কিলিং নিয়ে সত্য ঘটনা অবলম্বনে “জোডিয়াক (২০০৭)”- এর মতো দূর্দান্ত সব থ্রিলার সিনেমা পরিচালনা করা ডেভিড ফিঞ্চার যে শুধু থ্রিলার ঘরানায় আটকে নেই বরং সব ঘরানার সিনেমা বানাতে পটু সেটা তিনি জোডিয়াকের পর এই সিনেমাটি পরিচালনা করে প্রমান করে দেন। তিনি যেন নিজের মন, প্রাণ এবং ভালোবাসা সমস্ত কিছু ঢেলে দিয়েছেন এই সিনেমায়। তাঁর ক্যারিশমেটিক পরিচালনার কারনে এই সিনেমাকে সিনেমা নয় বরং কোন বড় উপন্যাস মনে হয়েছে যেটা পড়ে এক আলাদা জগতে তলিয়ে যেতে ইচ্ছে করে। এরিক রথ এবং রবিন সুইকর্ড-এর চমৎকার লেখনী এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এফ. স্কট ফিটজেরাল্ডের লেখা ১৯২২ সালের একই নামের একটি ছোট গল্পের উপর ভিত্তি করে এই সিনেমার গল্প লিখেছেন তাঁরা। ছোট গল্পটিকে বেশ ভালো ভাবেই ব্যাবহার করতে পেরেছেন এরিক ও রবিন এবং সাথে ডেভিড ফিঞ্চারের অতুলনীয় পরিচালনা সিনেমাটিকে দিয়েছে অন্য মাত্রা সেজন্য সিনেমাটি ধীরগতির হলেও বোর করে না বরং চুম্বকের মতো দর্শককে একেবারে শেষ পর্যন্ত দেখার জন্য আকর্ষণ করে।
সিনেমাটির সবথেকে আকর্ষণীয় দিক হলো এর দৃষ্টিনন্দন সিনেমাটোগ্রাফি। এমন কাজের জন্য ক্লডিয়ো মিরান্ডা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। কালারগ্রেডিং একটু ডার্ক এবং সাথে একটা বিষন্ন আবহের মিশ্রণ রয়েছে। এজন্য সিনেমাটির গভীরে এবং এর চরিত্রগুলির মধ্যে সহজে প্রবেশ করা যায় এবং তাদের সুখ-দুঃখ ও আবেগগুলি অনুভব করা যায়। সিনেমাটির ভিজুয়্যাল ইফেক্টের কাজ খুবই উচ্চমানের এবং চোখ জুড়ানো। অ্যালেক্সান্দ্রে ডেসপ্লাট- এর করা সঙ্গীত অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর ও আবেগঘন এবং সাথে সিনেমাটির সংলাপের কাজও অত্যন্ত চমৎকার।
একঝাঁক অভিজ্ঞ অভিনয়শিল্পীরা তাদের অসাধারন অভিনয় দ্বারা এ সিনেমাকে পৌছে দিয়েছে অন্য উচ্চতায়। “বেঞ্জামিন” চরিত্রে ব্রাড পিটের অভিনয় ছিল অনবদ্য এবং প্রতিটা সময়কালে বৃদ্ধ থেকে যুবক পর্যন্ত প্রতিটা শেডই তিনি বেশ চতুরতা ও দক্ষতার সাথে সামলেছেন। “ডেইজি” চরিত্রে কেট ব্লানচেটও করেছেন সুন্দর অভিনয় এবং নিজের রূপ দ্বারা করেছেন মোহিত। সিনেমাটিতে ব্রাড পিট এবং কেট ব্লানচেটের রসায়ন এমন যে সিনেমা শেষেও মনে ঘুরপাক খেতে থাকে। উল্লেখযোগ্য সহচরিত্র গুলির মধ্যে “কুইনি” চরিত্রে তারাজি পি. হেনসন, “টিজ্জি” চরিত্রে মাহেরসালা আলি, “এলিজাবেথ এব্বোট” চরিত্রে টিলডা সুইনটন, ছোট “ডেইজি” চরিত্রে এল ফানিং ইত্যাদি অভিনয়শিল্পীরা করেছেন সাবলীল অভিনয়।
কিছু কিছু সিনেমা আছে যেগুলোকে গতবাঁধা সিনেমার কাতারে ফেলা যায় না। এসব সিনেমা সবসময় স্পেশাল হয়ে থাকে এর ভিন্নধর্মী গল্পের জন্য। “দ্য কিউরিয়াস কেইস অফ বেঞ্জামিন বাটন” এমন সব সিনেমার কাতারে অন্তর্ভুক্ত। সিনেমাটি শুধু দুজন প্রেমিক-প্রেমিকার ভালোভাসার গল্পই বলে না। মানুষের জীবনের দুঃখ, দূর্দশা, অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাওয়া, ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করা ইত্যাদি গল্পও বলে এই সিনেমাটি। তাই সিনেমাটি দেখা শেষ করে সৃষ্টিকর্তার নিকট শুকরিয়া আদায় করতে ইচ্ছে করবে নিজের সুখময়, সুন্দর ও স্বাভাবিক জীবনের জন্য। ভিন্নধর্মী ধীরগতির আবেগময় ড্রামা রোমান্স গল্পের সিনেমা পছন্দ করে থাকলে এই সিনেমা অবশ্যই দেখা উচিত। সিনেমাটির বর্তমান আইএমডিবি রেটিং ৭.৮ ও রোটেন টম্যাটোজে ৭১% স্কোর রয়েছে।
লিখেছেনঃ R.Z. Rashad
অন্যান্য মুভি ডাউনলোড ও ব্লগের জন্য ভিজিট করুনঃ Blog

More To Explore

Flower Of Evil-cinemabaaz.xyz

Flower Of Evil Drama Review

ড্রামা রিভিউ🔮 Name : Flower Of Evil অশুভের ফুল….🌺🌺🔮Genre: Melodrama,Thriller🔮Country: Korea🔮Release : 29 July -23 Sep2020🔮Imdb: 8.7/1098% google like it💚💚 “Killing people does not satisfy

Read More »
Psycho (1960)-cinemabaaz.xyz

Psycho (1960) সিনেমা রিভিউ

এক রমণী স্নানঘরে ঝরনার পানি দিয়ে খুশী মনে শরীর ধৌতকরণে মগ্ন। বলতে গেলে শান্তিযুক্ত একটা পরিবেশ বিরাজ করছে। কিন্তু পিছে দিয়ে অকস্মাৎ মুখ আড়াল করা

Read More »

Defiance (2008) মুভি রিভিউ

🎬 Defiance (2008)🔰 Genre: War, Drama🔰 Director: Edward Zwick🔰 Actors: Daniel Craig, Liev Schreiber, Alexa Davalos, Jamie Bell🔰 Runtime: 2h 17m🔰 IMDB: 7.2 দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ

Read More »
Dollars Trilogy ( 1964-66)-cinemabaaz.xyz

Dollars Trilogy ( 1964-66) রিভিউ

🎬 Movie ⭕ Dollars Trilogy ( 1964-66) ১৯৪৩ সালে প্রথম মুক্তি পায় এক ভিন্ন ধরণের ওয়েস্টার্ন জনরার মুভি The Boy in The West। শুরুটা তেমন

Read More »