═══╣ Movie Info ╠═══
⚈ Movie Name ➠ Into The Wild
⚈ Year ➠ 2007
⚈ Gener ➠ Adventure | Biography | Drama
⚈ Cast ➠ Emile Hirsch, Kristen Stewart & Others
⚈ Director ➠ Sean Penn
⚈ Budget ➠ 20 Million
⚈ Box Office ➠ 56.8 Million (Worldwide)
⚈ Rotten Tomatoes ➠ 83%
⚈ Metacritic ➠ 73%
⚈ IMDB Ratting ➠ 8.1/10
═══════════════════════════
পারিবারিক বন্ধন, পড়ালেখার চাপ, কর্মক্ষেত্রের চাপ, সংসারের চাপ ইত্যাদির জন্য একজন মানুষের স্বাধীন ইচ্ছাশক্তিময় জীবন চাপা পড়ে যায়। তখন মানুষ নিজের জীবনকে উপভোগ করতে ভুলে যায়। নিজের আসল সত্তা এবং আসল প্রতিভাকে জলাঞ্জলি দিয়ে দেয়। নিজেকে বিলিয়ে দেয় কর্মময় বাস্তব জীবনের কাছে। কিন্তু এভাবে কি সত্যিই সুখে থাকা যায়? কর্মময় যান্ত্রিক জীবনকি মানুষকে সুখে রাখতে পারে? চারপাশে মানুষে মানুষে ঝগড়া, হিংসা, দাঙ্গা এবং যান্ত্রিক জীবনের জন্য মাঝে মাঝে মন চায় সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে দূরে কোথাও চলে যেতে যেখানে কেউ থাকবে না। একাই নিজের মতো করে বাঁঁচবো, নিজেকে আবিষ্কার করবো এবং অজানাকে জানবো৷ “Into The Wild” সিনেমাটি এমন কিছু বক্তব্য বহন করেছে।
সিনেমাটির গল্পটি আবর্তিত হয়েছে ক্রিস্টোফার ম্যাকান্ডলেসকে নিয়ে। সদ্য গ্রাজুয়েশন শেষ করেছে ক্রিস্টোফার৷ ভালো কর্মক্ষেত্রে যোগ দেয়ার আশায় বসে আছেন তার বাবা-মা। কিন্তু ক্রিস্টোফার করে ঠিক তার উল্টো কাজ। পরিবার, বাড়িঘর, টাকা-পয়সা এবং শহুরে আরাম আয়েশের জীবনের প্রতি মায়া উঠে গিয়েছে তার। তাই সব ত্যাগ করে অ্যাডভেঞ্চারে বেড়িয়ে পড়ে সে। অজানা জিনিস আবিষ্কার করা, নানা জায়গায় ভ্রমণ করা, নিজের জীবনকে ভালো মতো উপভোগ করা ইত্যাদি সব উদ্দেশ্য নিয়ে সে পাড়ি দিতে থাকে একের পর এক পথ। তার এই অ্যাডভেঞ্চার নিয়েই গল্প এগোতে থাকে।
ক্রিস্টোফার ম্যাকান্ডলেস- এর জীবনি নিয়ে জন ক্রাকাউয়ার লেখা “Into The Wild” বই- এর উপর ভিত্তি করে সিনেমাটি বানিয়েছেন শন পেন। শন পেন যে একজন দূর্দান্ত অভিনেতার পাশাপাশি একজন দক্ষ পরিচালক সেটা প্রমাণ করার জন্য এই সিনেমাটি যথেষ্ট। তাঁর অসামান্য পরিচালনা এবং সুনিপুণ লেখনীর জন্য সিনেমাটি দিয়েছে এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা। অ্যাডভেঞ্চার সিনেমা বলতেই যে নানা রকম অজানা প্রাচীন জায়গায় গুপ্তধনের সন্ধানে যাওয়া, জঙ্গলে টিকে থাকার লড়াই কিংবা বিভিন্ন দেশে গুপ্তচরবৃত্তি এমনটা নয়। এই সিনেমা এসব প্রচলিত নিয়ম থেকে অনেকটাই আলাদা এবং অনেকটাই ঠান্ডা মেজাজের। এখানে অ্যাডভেঞ্চারের পাশাপাশি মূল ক্যারেক্টরের জীবনটাকেই বেশি তুলে ধরা হয়েছে। তার চিন্তাভাবনা এবং মনের মধ্যে লুকিয়ে থাকা বিভিন্ন স্বপ্নের কথা বলা হয়েছে। তাই শন পেনের এমন পরিচালনা অবশ্যই প্রশংসনীয়৷
সিনেমাটিতে এরিক গ্যাটিয়ার- এর করা সিনেমাটোগ্রাফির কাজ অনেকটাই ভিন্নধর্মী হয়েছে। সাথে বেশ কিছু ক্যামেরার শটও আলাদা প্রকারের। অনিন্দ্যসুন্দর সিনেমাটোগ্রাফি এবং সফট কালার গ্রেডিং- এর জন্য প্রতিটা লোকেশন দারুন ভাবে ফুটে উঠেছে এবং সুন্দর লেগেছে দেখতে। মাইকেল ব্রুক, কাকি কিং এবং এডি ভেড্ডার এই তিন জনের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় করা ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর যেন এই সিনেমায় প্রাণের সঞ্চার করেছে। অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী এই স্কোর সিনেমায় সহজেই মিশে যেতে সাহায্য করেছে। সাথে রয়েছে চমৎকার সব জীবন দর্শনীয় সংলাপ যা মনের গহীনে দাগ কেটে যায়।
এই সিনেমার প্রাণ “মাইকেল ম্যাকান্ডলেস” ক্যারেক্টরে অভিনয় করা এমিলি হার্শ। পুরো সিনেমা বলতে গেলে তিনি একাই টেনে নিয়ে গিয়েছেন নিজের অভূতপূর্ব অভিনয় দ্বারা৷ বর্তমানের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ক্রিশ্চেন স্টুয়ার্ট “ট্রেসি” নামে একটি ছোট ক্যারেক্টরে অভিনয় করেছেন এবং সেখানে দেখিয়েছে নিজের কারিশমা। এছাড়া অন্যান্য সহ অভিনয়শিল্পীদের অভিনয়ও ছিল সাবলীল৷
মানুষ সমাজবদ্ধ জীব। একসাথে থেকে, একে অপরের সাথে বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে, টিকে থাকার লড়াইয়ে জয়ী হয়ে, অজানাকে আবিষ্কার করে অবশেষে এই উন্নত বিশ্বের জন্ম দিয়েছে। ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য, নিজের সুখ-দুঃখকে ভাগ করে দেয়ার জন্য, বিপদে সাহায্যের জন্য অবশ্যই পাশে একজনের উপস্থিতি প্রয়োজন। তাই সমাজ থেকে দূরে বনে-বাদাড়ে গিয়ে একা একা আনন্দে থাকার চেষ্টা করলেও একসময় না একসময় নিজের ভূলটাকে অনুধাবন করা যায় এবং আবার সমাজে মানুষদের মাঝে ফিরে আসতে মন চায়। “ইনটু দ্য ওয়াইল্ড” সিনেমাটি মাইকেলের অ্যাডভেঞ্চার দ্বারা এরকম অনেক শিক্ষনীয় বার্তা দিয়েছে৷ এই বার্তাগুলিকে নিজের জীবনে প্রতিফলন ঘটালে জীবনের আসল মানেটা বোঝা যাবে।
অতএব, ভিন্নধর্মী অ্যাডভেঞ্চার এবং আধ্যাত্মিক, দর্শনীয় এবং জীবনবোধ ধরনের সিনেমা পছন্দ করে থাকলে “Into The Wild সিনেমা অবশ্যই দেখা উচিত। কিছু আপত্তিকর দৃশ্য এবং ভাষার জন্য পরিবার নিয়ে না দেখাটাই শ্রেয়।
লিখেছেনঃ R.Z. Rayshad